| বঙ্গাব্দ
Space For Advertisement
ad728

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক অবরুদ্ধ, উপাচার্য ঘেরাও: প্রশাসনিক সংকটের আভাস?

  • আপডেট টাইম: 05-07-2025 ইং
  • 93833 বার পঠিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক অবরুদ্ধ, উপাচার্য ঘেরাও: প্রশাসনিক সংকটের আভাস?
ছবির ক্যাপশন: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক অবরুদ্ধ, উপাচার্য ঘেরাও: প্রশাসনিক সংকটের আভাস?

চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া উত্তেজনা এখন প্রশাসনিক সংকটের আশঙ্কা তৈরি করেছে। একদিকে শিক্ষকের অভিযোগ—তিনি পরিকল্পিতভাবে অবরুদ্ধ হয়েছেন, অন্যদিকে উপাচার্যকেও ঘেরাও করে রাখার মতো দৃশ্য উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতির সাক্ষাৎকার চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের কার্যালয়ে কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। এ সময় কুশল বরণ তিন ঘণ্টারও বেশি সময় সেখানে অবরুদ্ধ থাকেন বলে অভিযোগ করেন। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রশাসনের গাড়িতে তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

শনিবার (৫ জুলাই) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ৪ মিনিটের ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, উপাচার্যের কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে বাগ্বিতণ্ডা করছেন। ভিডিওতে এক শিক্ষার্থী উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনি নিজ যোগ্যতায় বসেননি, আপনাকে আমরা বসিয়েছি, আপনাকে আমাদের কথা শুনতেই হবে।” ভিডিওতে কথা বলতে দেখা গেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা শাখাওয়াত হোসেন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা তাহসান হাবীবকে।

সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এ পরিস্থিতিতে পড়া কুশল বরণ চক্রবর্তী বলেন, “আমাকে নিয়ে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তার জবাব দিতে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু কেউ প্রশ্নই করেনি। বরং সহ-উপাচার্য আমাকে ধমক দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।” তিনি আরও দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে ‘মব’ তৈরি করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।

অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতাকর্মীরা অভিযানে যুক্ত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী বলেন, “কুশল বরণ একসময় ফ্যাসিবাদের পক্ষে অবস্থান করেছিলেন এবং পরে বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন। তার মতো ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “মব সৃষ্টির অভিযোগ সঠিক নয়। বরং তিনিই (কুশল বরণ) ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। তার অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়েই এমন প্রতিক্রিয়া হয়েছে।”

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিভক্তি তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবে হুমকি-ধমকি ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রভাব প্রশাসনিক কার্যক্রমে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে, অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসন সম্পর্কের আড়ালে জমে ওঠা চাপ ও মতবিরোধ নতুনভাবে প্রকাশ পেয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান না হলে দীর্ঘমেয়াদে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও প্রশাসনব্যবস্থায় সংকটের জন্ম দিতে পারে।



রিপোর্টার্স২৪/আরএইচ

ad728

নিউজটি শেয়ার করুন

ad728
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ ইসলামিক টিভি - একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ
সকল কারিগরী সহযোগিতায় ক্রিয়েটিভ জোন ২৪